রাজধানীর গুলিস্তানে প্রতিদিনই বেপরোয়াভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে পথচারীরা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মহিলাদের গলার চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিনই বেপরোয়াভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করছে না।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের পর ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও দখলবাজীর মহোৎসব চলছে। প্রতিদিন গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের থেকে জিরোপয়েন্ট, জিপও এর সামনে এবং বায়তুল মোকারম গেটে রিক্সায় যাতায়াতকারী মহিলাদের কানের দুল, গলার চেইন এবং চাকু ধরে, মানিব্যাগ চুরি ছিনতায় নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজপথে ফুটপাতে শতশত দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি করছে একটি গ্রুপ।
দেশের রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তনের পর ঢাকার গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, বঙ্গবাজারের মার্কেট দোকান মালিক সমিতির নিয়ন্ত্রণ হাতবদল হয়েছে। বেশির ভাগ মার্কেট কমিটি থেকে আওয়ামী লীগ পন্থীরা পালিয়ে যাওয়াই এখন বিএনপি পন্থীরা মার্কেট কমিটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে মার্কেটগুলোতে ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে আলাপকালে নাম প্রাকাশ না করা শর্তে বেশ কয়েকজন হকাররা বলেন, আমরা ফুটপাতে কোনো মতে দোকানদারী করে সংসার চালাই। এখানে চাঁদা না দিলে দোকান চালানো যায় না। দোকানের আয়তন অনুযায়ী সমিতির কার্যালয়ে দিনে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া বা চাঁদা দিতে হয়।
ষাটোর্ধ্ব এক ব্যবসায়ী বলেন, তারা পার্কিং ইজারা নিলে শুধু পার্কিং চার্জ তুলবে। তারা তো মার্কেটের কোনো ব্যবসায়ী না। তাহলে তাদের লোকজন কেন আমাদের সমিতির অফিস দখলে নেবে? তারা কেন আমাদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো বিদ্যুৎ বিল তুলবে। আমরা এই বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি চাই। জাকের প্লাজা, নগর প্লাজা ও সিটি প্লাজার সমন্বয়ে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট এর মধ্যে দুই যুগের বেশি সময় ধরে জাকের প্লাজার নিয়ন্ত্রণ রেখেছেন ফিরোজ আলম নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি আগে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিতেন। এখন আবার বিএনপি পরিচয় দিতে শুরু করেছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত গুলিস্থান ফুটপাতে চাঁদাবাজী করতেন যুবলীগ কর্মিরা। এই ফুটপাতের হকার্স মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করে যারা চাঁদাবাজি করতেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি তালিকা তৈরি করেছে ডিএসসিসি। এই তালিকায় ৪০ জন চাঁদাবাজের নাম-ঠিকানা রয়েছে। এরা গুলিস্তান ও আশপাশের ৪০/৪৫টি ফুটপাতের হকার্স মার্কেট তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এখান থেকে তারা প্রতি মাসে দুই কোটি টাকার বেশি চাঁদা আদায় করে। ডিএসসিসি’র আইন শাখায় এই চাঁদাবাজদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা পাঠানো হয়েছে। আইন শাখাকে এদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
বেপরোয়া ছিনতাইকারী সর্বস্ব হারাচ্ছে পথচারীরা
- আপলোড সময় : ১৫-১০-২০২৪ ০২:০৭:৩৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৫-১০-২০২৪ ০২:০৭:৩৯ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ